চক্কর কাটছে চিতাবাঘ! কিন্তু কেন?

রহস্যে ঘেরা বন্যপ্রাণ!

চিড়িয়াখানায় জীবজন্তু দেখবার অভিজ্ঞতা নেই, এমন মানুষ বিরল। বিশেষত ভারতের প্রাচীনতম পশুশালাটি যখন কলকাতাতেই। আলিপুর জু (Alipur zoological Garden)-এর কথা বলছিলাম আর কী! ঢুঁ মেরেছেন নিশ্চয়ই। কত যে পশুপাখির আয়োজন সেখানে! দেখতে-দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়।

আচ্ছা, কখনও ভেবে দেখেছেন কি, বাঘ-সিংহ-চিতাবাঘ কেন খাঁচার সামনে এসে একই পথে বারবার যাওয়া-আসা করে? ইংরেজিতে এই ধরনের চলনকে বলে ‘pacing back and forth.’ তো প্রশ্ন হল, খাঁচাবন্দি বন্যপ্রাণের ওই পেসিং প্রবণতার কারণ কী?

#Pacing #পায়চারি #প্রাণী_আচরণ #AnimalBehaviour #AlipurZoo #চিড়িয়াখানা #খাঁচা #Cage

আপনি হয়ত ভেবেছেন, দর্শকের মনোরঞ্জনের জন্যই অমনটা করে থাকে ওরা। একেবারে ভুল ভাবনা। মানুষকে স্বেচ্ছায় বিনোদন দিতে ওদের বয়েই গেছে! খোঁজ নিয়ে দেখুন, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও এমন কোনও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেনি।
#Tiger
#বাঘ
#চিতাবাঘ
#Leopard
কল্পনায় এটা ভেবেও আতঙ্কিত হওয়া যায় যে, মানুষের গন্ধ পেয়ে ক্ষুধার্ত পশুরা ওই রকম ছটফট করে খাঁচার সামনে এসে! কিন্তু এটাও ভুল ধারণা। পেট ভরা থাকলেও ওরা ওরকমই আচরণ দেখাবে। তাহলে ব্যাপারটা কী?

Contrarily the fact is psychological:

আসলে, একই পথে বারবার ঘোরার বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। বাঘ-চিতাবাঘ-সিংহ প্রভৃতি প্রাণীর ওই আচরণ নিয়ে গবেষণা চলছে। নির্দিষ্ট কোনও যুক্তিসংগত কারণ এখনও খুঁজে পাননি বিশেষজ্ঞরা। তবে দুটি সম্ভাবনা বেশ জোরালো হয়ে উঠেছে এরই মধ্যে—

মুক্ত অরণ্যের অনুকূলে বাঘ, ভাল্লুক, সিংহ, চিতাবাঘের শরীর এমনভাবেই অভিযোজিত যে, পেশিতে-পেশিতে বিপুল পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়। শিকার সহ অন্যান্য কঠিন প্রাত্যহিকতায় সেই শক্তি ব্যয়ও হয়। কিন্তু চিড়িয়াখানার অপরিসর খাঁচায় সেসবের বালাই নেই। ফলে প্রবল পরাক্রমশালী বন্য জীবজন্তুর শরীরে উদ্বৃত্ত শক্তি জমা হতে থাকে। তা বের করে দিতেই বাঘ-সিংহের অমন পুনরাবৃত্ত চলন!

দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণটি হল—বন্দিজীবনের হতাশা। সেই নৈরাশ্য থেকে এক ধরনের স্নায়বিক অসুস্থতা তৈরি হয়। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়। তারই বহির্লক্ষণ শক্তিশালী বন্য প্রাণীর ‘pacing back and forth!’
#AlipurZoo #চিড়িয়াখানা #খাঁচা #Cage
এছাড়াও একটি সম্ভাবনাকে সম্প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রাণিবিজ্ঞানীরা। সেটা হল—উদ্বেগ ও আকাঙ্ক্ষা! পরাধীন হয়ে পড়ার ফলে জন্ম নেওয়া দুশ্চিন্তা। এবং হৃত স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনাও! খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, চিন্তাশীল ব্যক্তিরা সমস্যায় পড়লে পরিস্থিতির মোকাবিলায় ভিতরে ভিতরে মতলব ভাঁজেন। আর বাইরে দেখা যায় তাঁদের পায়চারি। বাঘ-সিংহ-চিতাবাঘদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একইরকম বলে অনুমান একাংশের।

As a matter of fact:

এসবই একধরনের আন্দাজ বা স্পেকুলেশন। নিশ্চিত করে কিছুই জানা যায়নি। সেক্ষেত্রে ওদের মতিগতি ওরাই বুঝুক আপাতত। আমরা বরং, আসুন, এই অবকাশে চিতাবাঘের চঞ্চলতায় চোখ বুলিয়ে নিই।