মমতার সূত্রেই শিবরাজের সাফল্য…
মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোতেই রাজনৈতিক মহলে বড় প্রশ্ন, শিবরাজ সিং চৌহান কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কৌশল বুঝতে দিনরাত এক করেছিলেন? ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সুপ্রিমোর লক্ষ্মীভান্ডার প্রকল্প গেরুয়া শিবিরকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মহিলারা দু’হাত উপুড় ক’রে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনী ফলে তারই ছায়া। ভোটের ১ মাস আগেও বিজেপির অতি বড় সমর্থক পর্যন্ত ভাবেননি, তাঁরা জিতবেন। শেষপর্যন্ত খেলা ঘোরালো মহিলাদের জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রকল্প ‘লাডলি বহনা’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সেদিনও এসব প্রকল্পকে ‘রেউড়ি’ বলে উপহাস করেছেন। অথচ সেই ‘রেউড়ি’ই তাঁদের ভোট-বৈতরণী পার করালো। এখন তাঁরা নিভৃতে কী বলছেন, তা অবশ্য জানা নেই।
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/shivraj.jpeg)
অন্যদিকে, জনতা জনার্দনের মন যে কী বিষম বস্তু, তা হাড়ে হাড়ে বুঝলেন তেলঙ্গানার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর। তাঁর হাত ধরে পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্যের আত্মপ্রকাশ। অথচ তাঁকেই পথে বসিয়ে দিলেন তেলঙ্গানার ভোটাররা। আর যে কংগ্রেস পৃথক তেলঙ্গানার দাবিতে কাঁটা বিছিয়ে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিল, তাদেরই কপালে জয়তিলক পরালেন জনগণ।
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/kcr-reddy-1.jpeg)
তেলঙ্গানার ফলাফল আবার যে প্রশ্নটি তুলে দিল, তা হল – বিজলি, পানি, সড়ক অথবা অন্নবস্ত্র-বাসস্থানের চাওয়া-পাওয়াই কি ভোটদানের মাপকাঠি? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা চলবে এখন।
কথায় বলে, অতীত আর জাতপাত – এই দুই নিয়ে রাজস্থান। কংগ্রেসের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী দু’ক্ষেত্রেই ডাহা ফেল। এর পাশাপাশি, বৃদ্ধতন্ত্রে আস্থা এবং ঘরোয়া কোন্দল মেটাতে না পারার ইস্যুও কংগ্রেসের পা পিছন থেকে টেনে রাখল।
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/vasundhara.jpeg)
ছত্তিশগড়ে নির্বাচনী ফল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল কংগ্রেস। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের হিন্দুত্ববাদী তাস আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার ভূপেশ বাঘেলকে ‘বাঘ’ হতে দিল না। ভোটে জেতার জন্য ডোল রাজনীতির সব অস্ত্রই প্রয়োগ করেছিলেন বাঘেল। তবে শেষ পর্যন্ত সেই অস্ত্রগুলো ভোঁতা করে দিল গেরুয়া শিবির।
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/bhupesh-baghel.jpeg)
৪ রাজ্যের নির্বাচনী ফলে যতই ওঠাপড়া থাক, একটা বিষয় কিন্তু ধারাবাহিকতা বজায় রাখল। বিষয়টি হল, বিজেপির সঙ্গে টক্করের প্রশ্নে কংগ্রেস এখনও নাদান খেলোয়াড়। ২০১৪ সাল থেকেই এই ধারাবাহিকতা চলে আসছে। এবার আশা ছিল, ৪ রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে টক্করে ভালো রিপোর্ট কার্ড হবে। আর তাতে ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেসের ওজন বাড়বে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়। এখন কংগ্রেসের অন্দরে নেতানেত্রীরা নিশ্চয়ই হারের কারণ খুঁজবেন তন্নতন্ন ক’রে। তা তাঁরা খুঁজুন। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল যে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের উপর বাজি রাখার ভরসা নেই।