সংবাদে প্রণবকন্যার গ্রন্থ! বিজেপির হাতিয়ার!!

রাজনৈতিক দৈন্য নাকি মিডিয়ার দীনতা?

“রাহুল গান্ধীর দেখা করার কথা ছিল সন্ধ্যায়। অথচ তিনি যখন এসে উপস্থিত হলেন, তখন বলা যায় সাতসকাল। প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রাতঃভ্রমণে। দেখা হল, কথাও হল। এবং তিনি চলে যাওয়ার পর পারিবারিক বৃত্তে রসিকতা করে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বললেন, ‘রাহুলের অফিস যদি এএম-পিএমের পার্থক্য না বোঝে, তাহলে তারা ভবিষ্যতে পিএমও চালাবে – আশা করে কীভাবে?”

রুপা পাবলিকেশন্স থেকে নিজের লেখা ‘Pranab, My Father: A Daughter Remembers’ গ্রন্থে এমনই স্মৃতিচারণা করেছেন প্রণবকন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় (Sharmistha Mukherjee)।

‘ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মেয়ে’ – এই প্রচলিত পরিচিতি ছাড়াও শর্মিষ্ঠার স্বনির্মিত আইডেন্টিটি আছে। ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী হিসেবে এক সময় যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে রাজনীতিতে যোগ দেন। দিল্লি কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র ও দিল্লি মহিলা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হন। অবশ্য ৭ বছরের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক কেরিয়ারে ইতি টেনে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় এখন পুরোদস্তুর লেখক।

নিজের বাবাকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত শর্মিষ্ঠার গ্রন্থে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের এমন কিছু ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির ‘দলিল’ স্থান পেয়েছে, যা নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। কিন্তু সেই বই থেকে বেছে-বেছে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) সম্পর্কিত নিতান্ত হাস্যরসাত্মক কাহিনীটিই হয়ে উঠল বিজেপি-সমর্থিত সংবাদ সংস্থার একমাত্র উপজীব্য! ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যারপরনাই আমোদ পাচ্ছেন, তাতে সন্দেহ কী! কাহিনীটির মধ্যে যে নির্মল কৌতুক, তা কলুষিত করে রুচিহীন রাজনীতি হচ্ছে – এও বিচিত্র নয়।

সমস্যা হল, মজার গল্প থেকে মুখরোচক চুটকি বানানোর কৌশল খুব উন্নত সাংবাদিকতার লক্ষণ নয়। আরও একটা কথা। এদেশে বাজেটে ঘাটতি পড়তে পারে, প্রায়শ পড়েও, গল্পে কখনই ঘাটতি পড়ে না। স্বয়ং প্রণববাবুকে নিয়েই কি কাহিনীর অন্ত আছে? বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান মহলে আজও সেসব স্বমহিমায় চালু। অটল থেকে নরেন্দ্র, গল্পের ঝাঁপি খুলে বসলে তো মুশকিল!

ওহো! সেগুলো ঠিক হাসির গল্প নয় – বিতর্কিত ইতিহাস।