দ্বিগুন ভাতা বাড়ছে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের।

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিহারে গ্রাম পঞ্চায়েতে্র প্রতিনিধি, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সাম্মানিক ভাতা অনেকটাই বাড়ল, তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ টানতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে

গোটা দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষজনকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। খালি পেটে কিছুই হয় না। দেশসেবাও হয় না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের ভাতা বাড়ানোর কারণ হিসেবে এই যুক্তি পেশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের পর একই পথের পথিক হয়ে বিহার সরকার এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের মুখিয়া থেকে আরম্ভ করে সরপঞ্চ, উপ-সরপঞ্চ, সেবিকা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সাম্মানিক ভাতা বাড়ালো। তবে যে পরিমাণ টাকা বাড়ানো হয়েছে, তাতে সংসার যাত্রা নির্বাহ হওয়ার কথা নয়। তবুও নাই মামার চাইতে কানা মামা ভালো।
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এস সিদ্ধার্থ সাম্মানিক ভাতা বৃদ্ধির খবর জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে মুখিয়ারা এবার থেকে মাস গেলে পাবেন ৫,০০০ টাকা। আগে পেতেন ২,৫০০ টাকা। উপ-মুখিয়ারা আগে মাস ফুরোলে ১,২০০ টাকা পেতেন। এবার থেকে পাবেন ২,৫০০ টাকা। একইভাবে সরপঞ্চ ও উপ-সরপঞ্চরা মাস গেলে ৫,০০০ ও ২,৫০০ টাকা করে পাবেন। আগে ২,৫০০ ও ১,২০০ টাকা করে পেতেন ওঁরা।
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে সাম্মানিক ভাতা ১০০ শতাংশ বাড়ানো হল। কেবল ওয়ার্ড সদস্যদের মাসিক সাম্মানিক ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা করা হয়েছে।
বাংলার বিধায়কদের ভাতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ানোয় বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলগুলো রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা বর্ধিত ভাতা নিতে অস্বীকার করেছেন। বিহারে পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, তাই দেখার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
বিহারে রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ লক্ষ ৫০ হাজার সদস্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে চলেছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে রাজ্য সরকারকে বছরে খরচ করতে হবে অতিরিক্ত ৩৩৯ কোটি টাকা। এর বাইরে বিহারের ২ লক্ষ ৩০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সাম্মানিক ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে সেবিকা ও সহায়িতাদের সাম্মানিক ভাতাও বাড়ছে। সূত্রের খবর, সেবিকারা মাসিক সাম্মানিক ভাতা হিসেবে ৭,০০০ টাকা এবং সহায়িকারা মাসিক সাম্মানিক ভাতা হিসেবে ৪,০০০ টাকা করে পাবেন। এজন্য রাজ্য সরকারকে অতিরিক্ত আরও ২৮৬ টাকা খরচ করতে হবে। প্রসঙ্গত, আগে সেবিকারা মাসে ৫,৯৫০ টাকা এবং সহায়িকারা মাসে ২,৯৭৫ টাকা পাবেন সাম্মানিক ভাতা হিসেবে পেতেন।
লোকসভা নির্বাচন আর কয়েকমাস পরই। ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত নীতিশ কুমারের ভোটকুশলী সিদ্ধান্ত কিনা তা নিয়েও চলছে জল্পনা।
বিহারে রাজ্য মন্ত্রিসভা আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, বিহারকে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নীতি অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। রাজ্য সরকারের আশা, এর ফলে তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়বে। এছাড়া পৃথক ক্রীড়া দফতর তৈরি করা হচ্ছে অ্যাথলিটদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে।