জয়নগরের মোয়াশিল্পের ভবিষ্যৎ খাদের কিনারায়

জয়নগরের মোয়া রসনা তৃপ্ত করেনি ভূভারতে এমন বাঙালি মিলবে না। জয়নগরের মোয়া বয়সে কতটা প্রাচীন তা নিয়ে বিতর্ক আছে। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের দাবি, ১৮৮৫ সালে জয়নগর থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় জয়নগরের মোয়া সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই হিসেবে জয়নগরের মোয়ার বয়স ১৩৮ বছর পেরিয়েছে।


জয়নগরের মোয়া তৈরির জন্যে লাগে খেজুর রস। খেজুর গাছ থেকে রস পাড়েন যে সমস্ত মানুষ তাঁদের বলা হয় শিউলি। খেজুর রস থেকে মোয়া তৈরিতে এই শিউলিদের পরিবারের সদস্যরা তৈরি করেন গুড়। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। কারণ শিউলিদের সংখ্যা দিনেদিনে কমছে।
বংশ পরম্পরায় জয়নগরের মোয়ার ব্যবসা এখানকার বাসিন্দা মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী দাস পরিবারের। মোয়ার ব্যবসার রাশ এখন নবীন ব্যবসায়ী রাজেশ দাসের হাতে। রাজেশের মুখ থেকে শোনা গেল, কেনইবা কমছে শিউলির সংখ্যা। জয়নগরের অন্য মোয়া ব্যবসায়ীরাও একই কথা জানিয়েছেন।
রাজেশ বললেন, ‘শিউলিরা পরিযায়ী শ্রমিক বনে যাচ্ছে। এককালে যে সমস্ত মানুষ বংশ পরম্পরায় খেজুর গাছ থেকে রস পেড়ে গুড় তৈরি করতেন, বেশি টাকা উপার্জনের জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন ওঁরা। কারণ জয়নগরের মোয়ার ব্যবসা মরসুমি ব্যবসা। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্তই চলে এই ব্যবসা’।


জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘আজ থেকে ১০ বছর আগে জয়নগর এবং সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৫ হাজার শিউলি বসবাস করতেন। বর্তমানে শিউলির সংখ্যা কমতে কমতে বড়জোর ১,২০০জন’।
এও জানা গেল, শিউলিদের ৭০ শতাংশ মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। বাকি ৩০ শতাংশ হিন্দু। শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের যে পরিবারগুলোর সদস্যরা বংশ পরম্পরায় শিউলি হিসেবে কাজ করেছেন, সেইসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের অনেকেই লেখাপড়া শিখছে। এই পেশায় ওদের আসার সম্ভাবনা আর নেই। ফলে আগামীদিনে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হবে বলে আশঙ্কা জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের।
এও জানা গেল, যে শিউলিরা খেজুর গাছ থেকে রস পাড়ার কাজ করেন তাঁদের অধিকাংশই পুরুষ। মহিলা শিউলি রয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন।
আর এখনও যাঁরা শিউলি হিসেবে কাজ করছেন, ওঁদের পরিবারের মহিলা সদস্যরা খেজুরের রস ফুটিয়ে গুড় তৈরির কাজ করেন। তাতে দরিদ্র পরিবারগুলোর হাতে দু’পয়সা আসে।
জয়নগরের মোয়া ঘিরে সঙ্কট আরও নানা ধরনের। এব্যাপারে স্থানীয় মোয়া ব্যবসায়ীরা জানালেন, সুন্দরবন এলাকায় খেজুরগাছের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। নির্বিচারে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে।
কারণ হিসেবে মোয়া ব্যবসায়ী রাজেশ দাস জানালেন, প্রধান কারণ নগরায়ন। গাছ কেটে মানুষজন বসতি তৈরি করছে। এর জেরে যে গতিতে গোটা সুন্দরবনেই খেজুরগাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, আজ থেকে ১০ বছর পরে তাতে জয়নগরের প্রসিদ্ধ মোয়া শিল্প বিপাকে পড়তে চলেছে খেজুরের রসের অভাবে।

পরিযায়ী শ্রমিক বনে যাওয়ায় হু-হু করে কমছে শিউলির সংখ্যা, নগরায়নের জেরে নির্বিচারে খেজুরগাছ কেটে ফেলায় জয়নগরের মোয়াশিল্পের ভবিষ্যৎ খাদের কিনারায়

জয়নগরের মোয়া রসনা তৃপ্ত করেনি ভূভারতে এমন বাঙালি মিলবে না। জয়নগরের মোয়া বয়সে কতটা প্রাচীন তা নিয়ে বিতর্ক আছে। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের দাবি, ১৮৮৫ সালে জয়নগর থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় জয়নগরের মোয়া সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই হিসেবে জয়নগরের মোয়ার বয়স ১৩৮ বছর পেরিয়েছে।
জয়নগরের মোয়া তৈরির জন্যে লাগে খেজুর রস। খেজুর গাছ থেকে রস পাড়েন যে সমস্ত মানুষ তাঁদের বলা হয় শিউলি। খেজুর রস থেকে মোয়া তৈরিতে এই শিউলিদের পরিবারের সদস্যরা তৈরি করেন গুড়। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। কারণ শিউলিদের সংখ্যা দিনেদিনে কমছে।
বংশ পরম্পরায় জয়নগরের মোয়ার ব্যবসা এখানকার বাসিন্দা মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী দাস পরিবারের। মোয়ার ব্যবসার রাশ এখন নবীন ব্যবসায়ী রাজেশ দাসের হাতে। রাজেশের মুখ থেকে শোনা গেল, কেনইবা কমছে শিউলির সংখ্যা। জয়নগরের অন্য মোয়া ব্যবসায়ীরাও একই কথা জানিয়েছেন।
রাজেশ বললেন, ‘শিউলিরা পরিযায়ী শ্রমিক বনে যাচ্ছে। এককালে যে সমস্ত মানুষ বংশ পরম্পরায় খেজুর গাছ থেকে রস পেড়ে গুড় তৈরি করতেন, বেশি টাকা উপার্জনের জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন ওঁরা। কারণ জয়নগরের মোয়ার ব্যবসা মরসুমি ব্যবসা। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্তই চলে এই ব্যবসা’।
জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘আজ থেকে ১০ বছর আগে জয়নগর এবং সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৫ হাজার শিউলি বসবাস করতেন। বর্তমানে শিউলির সংখ্যা কমতে কমতে বড়জোর ১,২০০জন’।
এও জানা গেল, শিউলিদের ৭০ শতাংশ মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। বাকি ৩০ শতাংশ হিন্দু। শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের যে পরিবারগুলোর সদস্যরা বংশ পরম্পরায় শিউলি হিসেবে কাজ করেছেন, সেইসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের অনেকেই লেখাপড়া শিখছে। এই পেশায় ওদের আসার সম্ভাবনা আর নেই। ফলে আগামীদিনে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হবে বলে আশঙ্কা জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের।
এও জানা গেল, যে শিউলিরা খেজুর গাছ থেকে রস পাড়ার কাজ করেন তাঁদের অধিকাংশই পুরুষ। মহিলা শিউলি রয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন।
আর এখনও যাঁরা শিউলি হিসেবে কাজ করছেন, ওঁদের পরিবারের মহিলা সদস্যরা খেজুরের রস ফুটিয়ে গুড় তৈরির কাজ করেন। তাতে দরিদ্র পরিবারগুলোর হাতে দু’পয়সা আসে।
জয়নগরের মোয়া ঘিরে সঙ্কট আরও নানা ধরনের। এব্যাপারে স্থানীয় মোয়া ব্যবসায়ীরা জানালেন, সুন্দরবন এলাকায় খেজুরগাছের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। নির্বিচারে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে।
কারণ হিসেবে মোয়া ব্যবসায়ী রাজেশ দাস জানালেন, প্রধান কারণ নগরায়ন। গাছ কেটে মানুষজন বসতি তৈরি করছে। এর জেরে যে গতিতে গোটা সুন্দরবনেই খেজুরগাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, আজ থেকে ১০ বছর পরে তাতে জয়নগরের প্রসিদ্ধ মোয়া শিল্প বিপাকে পড়তে চলেছে খেজুরের রসের অভাবে।