আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট কিনতে কৌশলে ডলার উড়ছে, কিভাবে জেনে নিন

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য : ইতিউতি ডলারের ঝাঁঝ কিছুটা কমেছে। বিশ্বের সব কোনায় এখন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বলের সামনে সবাই মাথা নোয়ায় না। ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে চীন। সব মিলিয়ে যাকে বলে world order তাই পাল্টাচ্ছে তবু এখনও বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিমান দেশের নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।এই কৌলিন্য নিয়ে গোটা বিশ্বের গনতন্ত্র। মানবাধিকারে যাতে লজ্জিত না হয় বা দূর্নীতি যেন সর্বগ্ৰাসী না হয় তা দেখার দায় নিজেই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট কিনতে কৌশলে ডলার উড়ছে। যা দেখে বিশ্বের গনতন্ত্র প্রেমী যা দেখে মানুষের চোখ কপালে উঠেছে।
আমরা তো গরীব দেশের বাসিন্দা। তবু আমাদের দেশে প্রতিটি নির্বাচনের আগে ভোটারদের নগদ টাকা, ঢালাও মদ, বিরিয়ানি বা মাংস ভাত দেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। খোদ প্রার্থী বা তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ভুরি ভুরি ওঠে। জনপরিসরে গনতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। আর সেই একই লক্ষ্যে ভিন্ন কৌশলে দেখা যাচ্ছে কিনা খোদ মার্কিন মুলুকে!
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি রাজ্যকে বলা হয় সুইং স্টেট। অর্থাৎ ওই রাজ্যগুলিই ভাবি প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নির্বাচন করে । এই রাজ্যে যে গুলির যে কোনো একটি ভোটার হলেই সামনে থাকছে রোজ এক মিলিয়ন ডলার জেতার সুযোগ। তবে সই করতে হবে একটি পিটিশনে। অর্থাৎ আমেরিকার সংবিধানে বলা বাকস্বাধীনতাও অস্ত্র রাখার অধিকারে সমর্থন জানাতে হবে। এই সামান্য কাজ টুকু করলেই আমেরিকা তথা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের অন্যতম ইলন মাস্কের পাবলিক অ্যাকশন কমিটি ভোটার দের এই লক্ষ্মী লাভের ব্যবস্থা করেছে। লটারি তে ভাগ্য না খুললেও হতাশ হওয়ার কারণ নেই। পেনসিলভ্যানিয়ায় পিটিশনে নাম লেখালেখি পাওয়া যাবে একশো ডলার। সংবিধানের বাকস্বাধীনতার সমর্থন টি লোক দেখানো। কেননা এরই মধ্যে ঘোষিত লটারি জয়ীদের দেখা যাচ্ছে ট্রাম্পের সমর্থনে ভিডিওবার্তা প্রচার করছেন।
যতই আমেরিকাকে ওপর থেকে চকচকে দেখাক না কেন বাস্তব হল সে দেশেও রোজকার জীবনযাত্রার খরচ জোটাতে বহু মানুষ হিমসিম খাচ্ছেন। আর সেই সুযোগ নিয়ে ট্রাম্পের বন্ধু এই ধনকুবের প্রলোভনের জাল ছড়িয়েছেন। যদিও আমেরিকার আইন বলছে কোনো ভোটার কে আর্থিক সুবিধা দেওয়া বা অন্য সুবিধা দেওয়া দন্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে দশহাজার ডলার জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। কিন্তু অর্থের জোরে আইন কে বুড়ো আঙুল দেখানো গোটা বিশ্বেই পরিচিত ছবি। তবে আশার কথা আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস নির্বাচনী আইনভঙ্গের কথা মনে করিয়ে ইলন মাস্ককে সতর্ক করেছে। সেই সতর্কবার্তায় এই বেপরোয়া ধনকুবের নিরস্ত হন কিনা সে দিকে সবারই নজর থাকবে।
Ok