বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য : কেন্দ্রীয় সরকার সুত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে আগামী বছর দেশ জুড়ে জনগণনার কাজ শুরু হবে। এর পরেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তার মধ্যে একটি হলো মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের লক্ষ্য কি পুরণ হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আগামী বছর জনগণনার কাজ শুরু করে ২০২৬ সালের মধ্যে সেই কাজ শেষ করতে চায়। অনেকেই মনে করছেন ২০২৯ য়ের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যেই সরকার এই সময়সীমা ধার্য করেছে। সংসদে মহিলা আসন সংরক্ষণ বিল পাস করানোর সময় সরকার জানিয়েছিল দেশে আসন পুনর্বিন্যাসের পরেই মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ চালু হবে।
স্বাধীন ভারতে ১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সাতবার জনগণনা হলেও আসন পুনর্বিন্যাস বা ডিলিমিটেশনের কাজ হয়েছে চারবার। ২০০২ সালে দেশে শেষ বার ডিলিমিটেশনের কাজ হয়। জনসংখ্যার অনুপাতে আসন পুনর্বিন্যাস হয়ে থাকলেও ১৯৭৫ সাল থেকে মোট আসন সংখ্যা একই থেকে গিয়েছে। বর্তমানে লোকসভায় আসন সংখ্যা ৫৪৩ । আর দেশের রাজ্যগুলির মিলিত বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৪, ১২৩। লোকসভার এই আসন সংখ্যা নির্ধারিত হয়েছে ২০০১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে। বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে আগামী জনগণনার ফল অনুযায়ী ডিলিমিটেশন হলে আসন সংখ্যা বাড়বে।
২০২৩ সালে সংসদে ১২৮ তম সংবিধান সংশোধন হয় । লোকসভা ও বিধানসভা গুলিতে আসনের ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই সংশোধনী আনা হয়। বিল পাসের পরে কেন্দ্রীয় সরকার জানায় দেশে ডিলিমিটেশনের পরে এই আইন প্রয়োগ করা হবে। অনেকেই মনে করেন দেশের রাজনীতিতে পুরুষ প্রাধান্যের কারণে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বহু চর্চা হলেও মহিলা সংরক্ষণ বিল চালু করা যায়নি। মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হলে বর্তমান লোকসভায় যে ৫৪৫ জন সাংসদ রয়েছেন তার মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা হবে ১৮২ । বাকি ৩৬৩ টি আসনে থাকবেন পুরুষরা। বর্তমান লোকসভায় ৪৬৭ জন পুরুষ সাংসদ রয়েছেন। ফলে ডিলিমিটেশন চালু হলে নারী শক্তি প্রসারিত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই অবস্থায় দেশ জুড়ে জনসংখ্যার অনুপাতে ডিলিমিটেশনের কাজ শেষ হলে লোকসভার আসন সংখ্যা বেড়ে ৭৭০ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা হবে ২৫৭। আর পুরুষরা বাকি ৫১৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ভোটের টিকিট বিতরণের ক্ষেত্রে টানাপোড়েন অনেকটা কমবে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।