বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য: দেশে এক নতুন বিপদের মাত্রা জুড়েছে ভুয়ো বোমাতঙ্ক। এই বিপদের ঠেলায় কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে ভারতীয় বিমান সংস্থা গুলি। গত তিন সপ্তাহে ভুয়ো বোমাতঙ্কের কারণে প্রায় সাড়ে তিনশো দেশি ও বিদেশী উড়ান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। অনেক বিমানের যাত্রা পথ পরিবর্তন করতে হয়েছে, কোনো টি আবার জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছে। বোমা রাখার ভুয়ো হুমকি গুলি এসেছে সমাজ মাধ্যমে। এই ঘটনায় অপরাধীরা সমাজ মাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলার পাশাপাশি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে বলে নিরাপত্তা সংস্থা গুলি জানতে পেরেছে। এই কারনে পরিচয় লুকানোর সুযোগ থাকায় নির্দিষ্ট কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বা মোবাইলের আই পি অ্যাড্রেস খুঁজে বার করতে বহু সময় লাগছে পুলিশের।
অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে যে বিমান পরিষেবায় যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর পনেরো লক্ষের বেশি মানুষ দেশীয় বিমান পরিষেবা ব্যবহার করেছিলেন। যেখানে এত বিপুল মানুষ পরিষেবা ব্যবহার করছেন সেখানে যে কোনো হুমকিকেই তো লঘু করে দেখা যায় না। ফলে হুমকির কারণে সংশ্লিষ্ট বিমানের অবতরণের ব্যবস্থা করতে হয়, কাছে পিঠের বিমান বন্দরে অবতরণের পরে সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হয়। এছাড়াও বিমানটির সর্বত্র তল্লাশি করা এবং যাত্রীদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হয়। শুধু তাই নয় যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করা এবং পরে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া এই সব ই করতে হয় বিমান সংস্থা গুলি কে। এই প্রক্রিয়ায় একদিকে যাত্রীদের যেমন নাকাল হতে হয় তেমনই অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা বাড়ে বিমান সংস্থা গুলির। সাম্প্রতিক এই পরপর হুমকির ঘটনায় বিমান সংস্থা গুলির ৬০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিপদ রুখতে কঠোর আইন আনতে চাইছে সরকার। সেই আইনে উড়ান সংক্রান্ত বিষয়ে সংস্কার করে অপরাধীদের দীর্ঘ মেয়াদী বিমান যাত্রা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি মোটা অর্থের জরিমানা এবং কারাবাসের কথা ভাবা হচ্ছে। এই আইনে বিমান সংক্রান্ত বিষয়ে বিমান বন্দরের বাইরের অপরাধকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে সমস্যা রয়েছে অন্যত্র। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সমাজ মাধ্যম গুলি মধ্যবর্তী সংস্থা হিসেবে কাজ করে। অন্যের বার্তার প্রচারক হওয়ায় এদের কোনো দায় থাকে না। এই সাম্প্রতিক ভুয়ো বোমাতঙ্কের ঘটনায় বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়ানো বন্ধ করতে সমাজ মাধ্যম কে এমন বার্তা ছড়ানো রোখার নির্দেশিকা জারি করেছে সরকার।