আব্বাস, নওশাদ, ত্বোহা, সিদ্দিকুল্লা, জামাত ইসলামীরা ইউনূসের বিরুদ্ধে নীরব কেন❓

লেখক- বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য

ধীরে হলেও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের বাংলাদেশের উপদেষ্টা সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। সোমবার Britain য়ে House of commons এ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে রিপোর্ট পেশ হয়। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দায়িত্ব প্রাপ্ত ক্যাথরিন ওয়েস্ট রিপোর্ট টি পাঠ করে জানান, সম্প্রতি তিনি ঢাকায় যখন যান তখন তাঁকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি তার বিপরীত। এছাড়াও বাংলাদেশে সফররত ব্রিটিশ নাগরিকদের দেওয়া সতর্ক বার্তায় ব্রিটিশ সরকার বলেছে, ‘সেখানে জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘ এই অশান্ত পরিস্থিতি তে বাংলাদেশের উপদেষ্টা সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু ‘ঘরের কাছে আরশি নগরে’ এই প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি বড়ই অস্পষ্ট। প্রতিবাদ হচ্ছেনা, আমি বলছিনা। আমি বলছি প্রতিবাদের কন্ঠে সংহতির বড়ই অভাব। কিছু দিন আগে ই ঘরের মেয়ের জন্য জাস্টিস চেয়ে জনপদ উত্তাল হয়েছে। সেই জাস্টিস চাওয়ার কন্ঠে সর্ব স্তরের মানুষের স্বর ছিল। ও পারে আজ যারা আক্রান্ত তারাও তো আমাদের স্বজন। তাঁদের সঙ্গেও তো আমাদের অনেক আত্মীয়তা, বন্ধুত্ব রয়েছে। তাঁদের সঙ্গেও তো আমাদের হৃদমাঝারে কথোপকথনের স্মৃতি উজ্জ্বল। তাহলে তাদের জন্য ও তো দীর্ঘ সীমান্ত জুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিতে মানববন্ধন করা যেত। লক্ষ কন্ঠে বিচারের স্লোগান ছড়িয়ে দেওয়া যেত। সেই ধ্বনি মহম্মদ ইউনুসের বধির কানে যদি না পৌঁছত যারা আক্রান্ত তাদের কান তো চিনে নিত স্বজনের উদ্বেগ। তাঁদের দগ্ধ প্রানে এই আশ্বাস তো পৌঁছত যে চরম দুর্দিনের সময় তারা নিঃসঙ্গ নয়। এই সময় মনে পড়ছে এক বামপন্থী নেতার কথা। যিনি ধর্মনিরপেক্ষতার পতাকা ওড়াতে কলকাতার রাস্তায় নেমেছিলেন। বিজেপি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছে বলে প্রতিবাদে নেমে রাস্তায় গোমাংস খেয়েছিলেন। আজ যখন ওপারে সংখ্যালঘুদের খাদ্য, জীবিকা, বাসস্থানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে তিনি বা তাঁর দল কে সে ভাবে চোখে পড়ছে না। একই রকম অবস্থান মুসলিম রাজনীতিকদের। ফুরফুরা শরীফ যাদের অগণিত ভক্ত ওপারে ও রয়েছে সেই দরগার আব্বাস সিদ্দিকী থেকে ত্বহা সিদ্দিকী একেবারে ই নীরব। পশ্চিম মেদিনীপুর পীর সাহেবের বিখ্যাত উরুস উৎসবের সময় প্রতিবছর ওপার বাংলা থেকে বহু মানুষ আসেন মেদিনীপুরে। তাদের আসার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করতে হয়। সেই দরগার ধর্মগুরুরা ও নীরব। আশ্চর্য ভাবে নীরব তরুণ নেতা ও বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। এই ইস্যুতে নীরব জামাত ইসলামী ও। অথচ, এই তো উপযুক্ত সময় যখন ইসলাম যে সাম্যের কথা বলে, ঐক্যের কথা বলে, ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মঙ্গল কামনা করে, তা ছড়িয়ে দেওয়ার। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কান্ডারীও রাজ্যের মন্ত্রী তবু বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ওঁদের বোঝাতে হবে, ভারতের মানুষ গনতন্ত্রে বিশ্বাস করেও নমাজ সহ সব কিছু করতে পারে। ‘ কিন্তু হিংসা যখন রাস্তায় ছড়ায় তখন কি শুধু সাংবাদিক সম্মেলনের গন্ডিতে আটকে থাকা যায়? তখন তো রাস্তায় নেমে ই প্রতিবাদ করতে হয়। মনে রাখতে হবে এই ভগ্নাংশ প্রতিবাদের সারেই কিন্তু অন্যপক্ষের গোঁড়া মতবাদের জমি উর্বর হয়। আমাদের নজরুল তো সেই কবে শিখিয়েছেন, ” হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কান্ডারী! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র!”