Gangasagar Mela: কথায় আছে “সব তীর্থ বার বার, গঙ্গাসাগর একবার”।বছরের এই দিনটির জন্য গোটা দেশের সব প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ গঙ্গাসাগরতটে পৌঁচ্ছে যায়। লাখো লাখো মানুষের আগমনে জনসুমদ্রের চেহারা নেয় গঙ্গা সাগর। সাধু সন্ত থেকে আম জনতা।স্বর্গলাভের আশায় কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সকলে গঙ্গায় ডুব দিয়ে নিজেদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিতে চান। কিভাবে এল এই মেলা।কিভাবে তৈরি হল কপিলমুনির আশ্রম। কেই বা এই কপিল মুনি , কেনই বা মানুষ বেছে নেন গঙ্গাসাগরকে চলুন সে সব জানতে একবার পৌরানিক যুগে ফিরে যাওয়া যাক।
ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক কাহিনীর সূত্র ধরে বলা হয় হিন্দু পুরাণ অনুসারে, ঋষি কপিল মুনির অভিশাপে রাজা সাগরের৬০ হাজার পুত্র ভস্মীভূত হয়েছিল। তাদের আত্মাকে মুক্ত করার জন্য, রাজা সাগরের বংশধররা তপস্যা করেছিলেন এবং গঙ্গাকে পৃথিবীতে নামিয়েছিলেন। নদীর জল তাদের ছাইয়ের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল, তারা পরিত্রাণ লাভ করেছিল। যেখানে গঙ্গা সমুদ্রের সাথে মিলিত হয় সেই সঙ্গমস্থান গঙ্গাসাগর নামে পরিচিত হয়।
কিন্তু কেন এই অভিশাপ সে সম্পর্কে কথিত আছে হিন্দু ধর্মানুসারে, একবার রাজা সাগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেন এবং দেবরাজ ইন্দ্র সাগর রাজার অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করে পাতাললোকে বেঁধে রাখেন । সাগর রাজ যখন তাঁর অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া খুঁজতে আসেন তখন তাকে খুঁজে পান কপিল মুনির আশ্রমের পাশে। রাজা সাগর মনে করেন, কপিল মুনি তাঁর যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করেছেন। রাজার মনের কথা জানতে পেরে কপিল মুনি রেগে যান এবং রাজাকে ভষ্মীভূত করে দেন।
এরপর রাজা সাগরের বংশের পরবর্তী প্রজন্ম ভগীরথ, মহাদেবের আরাধনা করেন এবং তাঁকে সন্তুষ্ট করে গঙ্গাকে স্বর্গ থেকে মর্তে নিয়ে আসেন। গঙ্গার সেই পবিত্র জলস্পর্শে সাগর বংশের ভষ্মীভূত সন্তানরা নিজেদের জীবন ফিরে পান এবং তাঁরা সহজেই স্বর্গে গমন করেন। সেই থেকে এই গঙ্গাসাগর মেলায় পূ্ণ্যার্থীরা হাজির হন। মা গঙ্গা হিন্দু ধর্মানুসারে পবিত্রতম নদী। তাদের বিশ্বাস মকর সংক্রান্তির পূর্ণ্য লগ্নে গঙ্গা যেখানে সমুদ্রের সঙ্গে মিশেছে সেই সঙ্গমস্থল গঙ্গা সাগরে ডুব দিলে সমস্ত পাপ ধুয়ে যাবে।
উল্লেখ গঙ্গাসাগর মেলা ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতে পাওয়া যায়। প্রাচীন লোককথা অনুযায়ী রানী সত্যভামা, গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির মন্দির প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্বামী রামানন্দ ১৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরের বর্তমান আরাধ্য মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। কুম্ভমেলায় দু’-তিনটি শাহি স্নানের লগ্ন থাকে। গঙ্গাসাগরে সে রকম নয়। মাত্র এক দিন, পৌষসংক্রান্তিতেই।