বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় মেলা প্রয়াগের কুম্ভমেলা শুরু হওয়ার আগে থেকে এই মেলায় মুসলমানদের অংশগ্রহণ ও মেলা প্রাঙ্গনে মুসলিম ব্যবসায়ীরা মেলা প্রাঙ্গনে যাতে ব্যবসা না করতে পারে তার জন্য কার্যত হুশিয়ারি দেওয়া হয়।অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের প্রধান মহন্ত রবীন্দ্র পুরী মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে যারা “ধর্মকে কলুষিত” করে তাদের প্রয়াগরাজের আসন্ন মহা কুম্ভ মেলার সময় দোকান দেওয়ার বিরোধীতা করছি।পুরী আরও বলেছিলেন, “যদিও মুসলমানরা আমাদের ভাই, এবং তাদের সাথে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই, তবু আসন্ন মহা কুম্ভ মেলার সময় তাদের দোকান দেওয়া বিরোধীতা করা উচিত কারণ তারা আমাদের ধর্মকে কলুষিত করবে। তাদের মুদির দোকান দেওয়া উচিত নয়, জুসের দোকান, খাবারের দোকান এবং চায়ের দোকান ও দেওয়া উটিত নয়,কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে খাবারে থুথু ফেলে।” এমন উত্তরপ্রদেশ সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী ও কুম্ভমেলা থেকে স্থানীয় মুসলমানদের দূরে রাখার পক্ষপাতী ছিলেন।কুম্ভ থেকে দূরে রাখা এই মুসলমানরা ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়া ভক্তদের জন্য মসজিদের দরজা খুলে দেয়।এ বছর আর্থিক বয়কট করে মুসলমানদের কুম্ভের মেলা প্রান্ত থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কুম্ভের পদপিষ্টের ঘটনার পর মুসলমানরা তাদে্র এলাকায় ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়া ভক্তদের সেবায় এগিয়ে এসেছেন। তারা তাদের জন্য তাদের ঘরের দরজা, মসজিদের দরজা খুলে দিয়েছেন।এমনকি তাদের খাওয়া-দাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেছে।
বিপর্যয়ের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মুসলমানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত ভক্তদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের জন্য খাবার, জল, কাপড়, ওষুধ ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা শুরু করে। এমনকি তাদের ঘর, মসজিদ দরজা খুলে দিচ্ছেন। এলাহাবাদ থেকে এমন অনেক ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যা আমাদের সম্প্রীতির শিকড় কতটা গভীরে তা প্রমাণ করছে। অতীত সময়কাল থেকেই এলাহাবাদের মুসলমানরা সর্বদা কুম্ভকে একটি সম্মিলিত সামাজিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং উত্সব হিসাবে দেখেছে। তিনি এই অনুষ্ঠানের জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতেন। এতে একদিকে যেমন তাঁর কর্মসংস্থান হয়েছে, অন্যদিকে দেশ ও বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত ভক্তদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। কুম্ভের মহিমার কারণে তিনি নিজেকে এলাহাবাদী বলতে এবং আলাদা হতে গর্বিত হলেও এবারের কুম্ভ থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেই ঐতিহ্য বাধা পড়েছিল। কিন্তু বিপদের দিনে এ সব মাথায় না রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ব্রাত্য করে রাখা মুসলিমরাই।
