কান্ডারি হিসাবে দলের রাশ নিজের হাতেই রাখছেন তৃণমূল নেত্রী সেনাপতির ভূমিকা আপাতত অস্পষ্ট থেকে গেল

TMC Meeting 2025

কলকাতা

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভা থেকে তৃণমূলের সক্রিয় সংগঠক থেকে সক্রিয় কর্মীরা কি বার্তা পেল। বিশেষ করে দলের অন্দরের অলিখিত শিবিরের দুই পক্ষ কোন দিকে কতটা জল গড়াল তা নিশ্চয় মাপতে শুরু করেছেন। ২০২৬ বিধানসভায় নির্বাচনে নেতৃত্বের ভারসাম্যে পাল্লা কোন দিকে বেশি ঝুঁকছে সেদিকে থেকে বিচার করতে গেলে ইন্ডোরের সভা থেকে একটা পূর্বাভাস ধরা পড়েছে। সেগুলি সংক্ষেপে তুলে ধরা যাক।

এক, সরকার ও দলে এক ও একমাত্র নির্দেশক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। সেই মতো দলের সবাইকে মেনে চলতে হবে।

দুই. দলের যাবতীয় কর্মকান্ড তৃণমূল ভবন থেকেই পরিচালিত হবে। ক্যামাক স্ট্রীটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের কোন উল্লেখ করেননি দলনেত্রী।দলীয় নেতৃত্বকে সব জানাতে হবে দলের সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। তার মাধ্যমেই নেত্রী সব খোঁজ খবর রাখবেন। তবে আইপ্যাক সম্পর্কে কোন মন্তব্য করা যাবে না জানালেন নেত্রী।একইসঙ্গে ভোটে দলীয় কর্মকান্ড পরিচাালনার কাজে কর্পোরেট ভোট কূশলী এই সংস্থাকে কাজে লাগানো হবে।

তিন.অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্যে জানিয়েছেন দলের উর্দ্ধে কেউ নন। পক্ষান্তরে দলের বহু প্রবীণ নেতার একাধিক নেতা নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে কিছু মন্তব্য যে ঠিক হয়নি তা যেমন তুলে ধরেছেন একই ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় শৃঙ্খলার ওপর জোর দিয়েছেন।এর ফলে লাগাম ছাড়া মন্তব্যে সবার প্রতি কড়া নজরদারি চলবে দু তরফেই।

চার, দলের জেলা সভাপতিদের মধ্যে গা ছাড়া মনোভাব দেখলেই তৃণমূল নেত্রী রেয়াত করবেন না পরিস্কার জানিয়েছেন।

পাঁচ, নেতাজি ইন্ডোরের বক্তার তালিকায় এবার জায়গা হয়নি ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যা, সৌগত রায়, চন্দিমা ভট্টাচার্যের মতো ওজনদার নেতা নেত্রীদের। সেই জায়গায় শতাব্দী রায়, সাগরিকা ঘোষ,কীর্তি আজাদ,ইউসুফ পাঠানরা জায়গা পেয়েছেন।

ছয়, রীতি ভেঙে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে বক্তব্য রাখতে দেখা গেল শতাব্দী সহ বাকি বক্তাদের। সব শেষে বক্তব্য যথারীতি রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সাত, বক্তা থেকে নেতা নেত্রীদের কার ও গলায় শোনা গেল না  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে দলের সেনাপতি কিংবা নব জোয়ারের কান্ডারি বলতে। এমনকি সমাবেশস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কোন নেতার ছবি দেখা যায়নি।

আট. দুর্নীতির ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সংস্থা তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি ফাঁসি কাঠে ঝুলতে রাজি বলে অভিষেকের কন্ঠে হুঙ্কার শোনা গেলেও দলনেত্রী ব্যক্তিগত ভাবে কারও নাম না করে বলেছেন ভোট এলেই বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে, নোটিশ পাঠায়।

নয়, ভোটার তালিকায় কারচূপি রুখতে সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে ৩৫ সদস্যের যে কমিটি তৈরি করা হয়েছে সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক সদস্য হিসাবেই তুলে ধরা হয়েছে।কমিটিতে প্রবীণ নেতারাই বেশি জায়গা পেয়েছেন।

দশ, নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সেবাশ্রয় কর্মসূচীর সাফল্য তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এ বিষয়ে নেত্রীর মুখে কোন কিছু শোনা য়ায়নি।

সব মিলিয়ে দলের সব রাশ দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে রেখেই ২০২৬ নির্বাচনে তৃণমূল ময়দানে নামবে এই বার্তা নেতাজি ইন্ডোরের পারিপাশ্বিক পরিবেশ,ও বক্তব্য থেকে পরিস্কার। বাকিটা সময় বলবে।