বাংলায় বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি পদে কে এগিয়ে সুকান্ত শুভেন্দু দিলীপ না নতুন কোন মুখ

বাংলার বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে এগিয়ে কে সুকান্ত, শুভেন্দু দিলীপ বা অন্য কোন মুখ

২০২৬-এ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য ইতিমধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সংকেত মিলেছে। বিশেষ করে ওড়িশা, দিল্লির পর এবার বাংলায় তৃণমূল সরকারের পতন ঘটাতে মরিয়া হয়ে উঠবে বিজেপির নরেন্দ্র মোদি, অমিত শা, জেপি নাড্ডারা এটা পরিষ্কার। কারণ জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাংলায় ক্ষমতা দখল বিজেপির অধরাই থেকে গেছে।

 ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় ব্রিগেড নবান্নে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া প্রচার চালিয়ে ো তাদের আসন বেড়েছে কিন্তু বিজেপির চেয়ে অনেক অনেক কদম এগিয়ে তৃণমূল ক্ষমতা ধরে রেখেছে। আবার ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি গর্জন করলেও আশানূরূপ আসন জিততে পারেনি। বরং ২০১৯ এর লোকসভার চেয়ে আসন সংখ্যা অনেকটাই কমেছে।

 এখন এই আবহে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। কারণ রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্ত মজুমদারের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হতে এক বছরের কম সময় বাকি রয়েছে। তাই এবারের রাজ্য সভাপতি পদে কে বসবেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে।

 ইতিমধ্যেই ২৫টা জেলার জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫ টি জেলা সভাপতির মধ্যে ১৭ টি নতুন মুখ। বিজেপির সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দু বারের বেশি কেউ একই পদে থাকতে পারেন না। সেদিক থেকে সুকান্ত মজুমদার ২০২১ সালে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সে দিক থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি রাজ্য সভাপতি পদে থাকতে কোন বাধা নেই।

আরএসএস ঘনিষ্ঠ সুকান্ত মজুমদার সেই অর্থে দিলীপ ঘোষ বা শুভেন্দু অধিকারীর মত দাবাং নেতা নয়। তাই অনেকেই মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে কাউন্টার করার মত রাজ্য সভাপতি হতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী বা দিলীপ ঘোষ।

 কিন্তু দলের এক পথ এক ব্যক্তি নীতির কারণে শুভেন্দু অধিকারীকে দায়িত্ব দিতে হলে তাঁকে বিরোধী দলনেতার পথ ছাড়তে হবে।দ্বিতীয়ত শুভেন্দু অধিকারীর পজিটিভ দিক হচ্ছে তিনি ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় ১৯৫৬ ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে হারিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি যেভাবে কট্টর হিন্দুত্ববাদী লাইন নিয়েছেন তাতে তাঁকে কেন্দ্র করে একটা আবেগ তৈরি হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তৃণমূল থেকে আসা শুভেন্দু অধিকারী কে কি আরএসএস নেতৃত্ব খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চাইবে? সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

এবার আসা যাক দিলীপ ঘোষের সম্ভবনার বিষয়ে। এখনো পর্যন্ত বাংলায় বিজেপির সবচেয়ে সফল সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি তিনটি আসন থেকে বেড়ে ৭৭ আসন দখল করে চমকে দিয়েছিল।দিলীপ ঘোষের সোজাসাপটা মেঠো কথাবার্তা দাবাং চরিত্র বিজেপির তৃণমূল স্তরের নেতা কর্মীদের যথেষ্ট চাঙ্গা করেছিল।দিলীপ ঘোষের নজরকাড়া সাফল্যের পরও আস্তে আস্তে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। আরএসএসের ঘনিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁর জেতা আসন মেদনীপুর থেকে সরিয়ে পূর্ব বর্ধমানে প্রার্থী করা হয়েছিল। তিনি লোকসভায় পরাজিত হন।

তাই দিলীপ ঘোষের হাতে আবার দলের ব্যাটন দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

বিজেপির অন্দরমহলের খবর রাজ্য সভাপতির পদে চেনা মুখের বাইরে নতুন কোন মুখ জায়গা দেওয়া হতে পারে। আবার মমতা ব্যানার্জীর কাউন্টার করার জন্য বিজেপির কোন মহিলা নেত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

সেদিক থেকে এই ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।

 তবে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পছন্দের তালিকায় ফের একবার সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব পাওয়ার তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।