Labour Controversy
ঝাড়গ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদন
ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের চুনপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মাইতি পোল্টি ফার্মে গত কদিন ধরে ঠিকা শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিল। তিন দিন কাজ বন্ধ করে, কারখানার গেটে প্রতিবাদ অবস্থান করেছিলেন শ্রমিকরা।। ঠিক শ্রমিকরা এই অচলাবস্থা কাটাতে মাইতি পোল্ট্রি ফার্মের তৃণমূল শ্রমিক নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু শাসক শ্রমিক সংগঠন তাদের সমস্যা মেটাতে পারেননি বলে ঠিকা শ্রমিকদের অভিযোগ। শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে ঝাড়গ্রামের সামাজিক আন্দোলনের নেতা মহা মোড়ল অনুপ মাহাতোর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সাহায্য চায়। অনুপ মাহাতো দায়িত্ব নিয়ে পোল্ট্রি ফার্মের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে দেন এবং ঠিকা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল কিন্তু বিতর্ক তৈরি হয়েছে মাইতি পোল্ট্রি ফার্মের এক স্থায়ী কর্মীর মুচলেকাকে কেন্দ্র করে।
ওই স্থায়ী কর্মী মাইতি পোল্টি ফার্মের ম্যানেজারকে উদ্দেশ্য করে একটি আবেদন করেছেন সেখানে তিনি লিখেছেন আমি একজন স্থায়ী কর্মী। গত ২৫ মার্চ প্রতিষ্ঠানের গেটে যে অপ্রীতিকর কাজটি করেছি আমি তার জন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ।একজন স্থায়ী কর্মী হয়ে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে এবং কন্ট্রাক্টারদের সাথে আগে থেকে প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সম্পর্কে অবগত না করে এই কাজ করার প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ক্ষতি আমি স্বীকার করছি। আর্থিক ক্ষতি বহন করতে আমি অপারক। ভবিষ্যতে যাতে আমার দ্বারা এরকম ভুল না হয় আমি সর্বদা সতর্ক থাকব।এই আবেদনের একেবারে শেষে লিখেছেন মহাশয়ের কাছে বিনীত অনুরোধ আমাকে এবারের মত অন্যায় মার্জনা করে প্রতিষ্ঠানে পুনরায় কর্মে বহাল করার জন্য একান্ত অনুরোধ করছি। এবং তারপর একটু ভুল হলে প্রতিষ্ঠানে যে ব্যবস্থা নেবে আমি তা মেনে নিতে প্রস্তুত থাকবো।

এভাবে একজন স্থায়ী কর্মীকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন মহা মোড়ল অনুপ মাহাতো। তিনি জানান কোন কর্মীর কাজের গাফিলতির জন্য কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য একজন স্থায়ী কর্মীকে এভাবে মুচলেকা লিখতে হবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। কর্মীদের প্রতিবাদ জানানো সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ যেভাবে চাপ দিয়ে এভাবে মুসলেকা লিখতে বাধ্য করছে এবং চাকরি হারানোর ভয়ে ঐ কর্মী তাই লিখছেন এটা চূড়ান্ত অন্যায়।। কর্তৃপক্ষের এই মানসিকাতার তীব্র বিরোধিতা করেছেন অনুপ মাহাতো।
প্রসঙ্গত বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মাইতি পোল্ট্রি ফার্মে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীরাও বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। সামাজিক মাধ্যমে দুজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে লেখা হয়েছে যে ” কিছুদিন আগে পর্যন্ত চুনাপাড়া মাইতি হ্যাচারী শাসক তৃণমূলের দখলে এবং আপনারা দুজনে মিলে মালিকপক্ষের সাথে কি এমন চুক্তি করলেন যে তৃণমূল কর্মীরা আজ সমাজের কাছে গিয়ে তাদের অভিযোগ জানাতে হচ্ছে। তৃণমূলের চেয়ারে বসে পাথরা অঞ্চলকে শেষ করার জন্য আপনারা দায়ী। জেলা নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বিশেষ অনুরোধ বারবার তৃণমূল দলটাকে শেষ করে ফেলছে এই দুজন ব্যক্তি। এদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
ফেসবুকে লেখা পোষ্টের অংশ

স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের অন্দরে সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের নির্দিষ্ট দুজন নেতার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করছেন। এবং গুরুতর অভিযোগ তুলছেন। তার মাঝে এভাবে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে এক স্থায়ী কর্মীর কাছ থেকে। এর মধ্যে গভীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করছেন আন্দোলনকারীরা।
