Digital Census 2025
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক
২০২১ এ জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। তা হয়নি। দশ বছর অন্তর জনগণনার কাজ হওয়াই রীতি। কিন্তু, স্বাধীনতার পরে এই প্রথম তা হয়নি। অবশেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে ২০২৭ সালে জনগণনার কাজ হবে। পাশাপাশি, স্বাধীনতার পরে এই প্রথমবার জনগণনার সঙ্গে জাতি গণনাও হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে। ব্রিটিশ পদানত ভারতে ১৯৩১ সালে শেষ বার জাতি গণনার কাজ হয়েছিল। নির্দিষ্ট দশ বছর সময়ের মেয়াদে জনগণনা না হওয়ায় দেশ পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারণে নানান অসুবিধার কথা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে দেশে এই প্রথম ‘ ডিজিটাল সেনসাস ‘ হবে। সরকারের এই ঘোষণায় জনগণনার বিশেষজ্ঞরা গণনার কাজে দক্ষতা যুক্ত হওয়ার কথা বললেও কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ডিজিটাল সেনসাস ‘ এর কারণে দক্ষতা বাড়ার পাশাপাশি তথ্য বিশ্লেষণে সময় কম লাগবে এবং হাতে কলমে কাজে যে পরিমাণ স্বাভাবিক ভুল হয় তা অনেকটাই কমবে। একই সঙ্গে তাদের আশঙ্কা প্রত্যন্ত এলাকায় যাঁরা বাস করেন এবং যারা সমাজের প্রান্তজন তাঁদের অনেকেই জনগণনার বাইরে থেকে যেতে পারেন। বিশেষ করে, প্রত্যন্ত গ্ৰামীন এলাকায় যে প্রান্তিক সমাজ রয়েছে সেই গন্ডির মহিলারা জনগণনার বৃত্তের বাইরে থেকে যেতে পারেন বলে অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ওই সমস্ত প্রান্তজনেদের স্মার্টফোন, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ডিজিটাল সংযোগ এর অভাব থাকাটাই স্বাভাবিক।
বিশেষত মহিলারা এই সুযোগে গুলি থেকে বঞ্চিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর পুনম মুতরেজা এক সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘গ্ৰামীন এলাকায় বসবাসকারী মহিলাদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন। এছাড়াও নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলাদের নিজস্ব মোবাইল ফোনের অধিকারীর সংখ্যা অত্যন্ত কম।এর ফলে ‘ডিজিটাল ফার্স্ট ‘ এর উদ্যোগে সমাজের এই অংশ গণনার বাইরে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুনম মুতরেজার মতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া ডিজিটাল জনগণনার কাজ হলে সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য আরও বাড়বে।
পুনম মুতরেজার মতে সমাজের প্রত্যন্ত এলাকায় এবং প্রান্ত সমাজের ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণনার কাজ নাহলে তথ্য সম্পূর্ণ হবে না। পুনম মনে করেন সঠিক তথ্য পেতে হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কোনো বিকল্প নেই। তবে প্রযুক্তির ব্যবহারকেও তিনি বাতিল করছেন না। তাঁর মতে প্রযুক্তি অবশ্যই সহযোগী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
