BJP’s IT cell’s misleading propaganda
মনিরুল হোসেন, সাংবাদিক
দুই নাবালক সন্তান সঙ্গে আট মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী ও মা কে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বীরভূমের একটি পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বনদ্যোপাধ্যায়ের কাছে কদিন আগেই কাতর আবেদন জানিয়েছে যাতে তাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। তৃণমূল সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এই পরিবারটির পরিস্থিতি সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছিসেন। তুলে ধরেছিলেন দিল্লী পুলিশ বাংলায় কথা বলার জন্য এই পরিবারটিকে বিএসএফের মাধ্যমে জোর করে বাংলাদেশী নাগরিকের তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করেছে। সামিরুল ইসলামের এই পোষ্টের পর বিজেপির আইটি সেল সামিরুল ও তাঁর আইনজীবি স্ত্রীর সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে। এমনকি এই পরিবারকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে কার্যত প্রচার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরি করে।

এবার উল্টে বিজেপির আইটি সেলকে চাপে ফেলে দিল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। আজ নিজের সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা ঐ পরিবারের ১৯৭০ সালের আগের বাড়ির দলিল প্রকাশ্যে আনল তৃণমূলের এই তরুণ সাংসদ। এই দলিলের পর এই পরিবারকে আর কোন ভাবেই বাংলাদেশী বলার কোন সুযোগই থাকল না। স্বাভাবিক ভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে বিজেপির আইটি সেলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন সামমিরুল। অত্যন্ত কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। সামিরুল ইসলাম কি লিখেছেন তা সম্পূর্ণ তুলে ধরছি।
“আমি Narendra Modi যখন আপনাকে কয়েকটি ন্যায্য প্রশ্ন করলাম তখন হঠাৎ করেই বিজেপির আইটি সেল অসত্য তথ্য দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে আক্রমণ করতে মরিয়া হয়ে উঠল।শুধু আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে নয়, বরং বাংলার সেই গরিব ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে যারা বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির কারণে আজ বাংলাদেশে আটকে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার প্রপাকান্ডা শুরু করলো। মনে রাখবেন তারা বৈধ ভারতীয় নাগরিক।

দেখুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহাশয়, আপনার অর্ধশিক্ষিত চামচা আর অজ্ঞ দালালরা কি ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি—এই অর্ধশিক্ষিত দের থামান, নইলে তারা নিজেরাই নিজেদের অজ্ঞতা ও দেউলিয়া মানসিকতার পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে ফেলবে এবং যথারীতি আপনাকে বিপদে ফেলবে।যদিও আমি বিশ্বাস করি না কাউকে নথি দেখিয়ে তার নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বাধ্য করা উচিত, তথাপি কিছু অন্ধ সমালোচকের জ্ঞানের জন্য কিছু প্রমাণ তুলে ধরছি। এখানে যে attachments রয়েছে সেখানে সুইটি বিবির বাবার বাবা ও মায়ের বাবা ( দুই দাদু) জামিরউদ্দিন খান ও বাবু শেখের ১৯৭০ এর আগের ও পরের জমির দলিল। অন্যদিকে সোনালি বিবির বাবা ভোদু শেখের দাদু মুনখুশ শেখের নামে নথিভুক্ত ১৯৫৬ সালের দলিল। যারা বিজেপিতে সত্যিই লেখাপড়া জানে, তারা বুঝে যাবেন যে এই মহিলারা সেই বিজেপি দালালদের তুলনায় অনেক বেশি ভারতীয়। আমার সন্দেহ হয়, বিজেপির ওই চামচাদের নিজেদের এমন কোনও প্রমাণপত্র আদৌ আছে কি না।
লজ্জাজনক ব্যাপার হলো, বিজেপির মধ্যে থাকা কিছু অজ্ঞ, বিভ্রান্ত ও বাঙালি বিদ্বেষী গোষ্ঠী এই দুই নির্দোষ ভারতীয় মহিলাকে নিশানা করে চলেছে—অন্যদিকে, তাদের নেতা নরেন্দ্র মোদী মহাশয় এখন বাংলার মন পেতে “জয় মা কালী” আর “জয় মা দুর্গা” বলছেন, আর “জয় শ্রী রাম”-কে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বাংলার দরিদ্র মহিলাদের জন্য তাঁর কোনও সহানুভূতি নেই।অপেক্ষা করুন চামচার দল, আপনাদের ও আপনাদের গুরু শিগগিরই যোগ্য জবাব পাবেন।
মাননীয় নরেন্দ্র মোদী আমি আপনাকে অনুরোধ করছি—যদি আপনার দল সত্যিই সাহসী চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি থাকে, তাহলে দয়া করে একটি সংসদীয় কমিটি গঠন করুন, যারা মাঠে নেমে যাচাই করবেন, যাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তারা আসলে কোথাকার নাগরিক। গোটা দেশ নিজের চোখে দেখুক, এই নারীরা বাংলাদেশের নয়, ভারতের মাটিতেই জন্মেছে এবং তাদের পূর্বপুরুষরা ভারতীয়। তারা নিশ্চয়ই শিগগিরই তাদের জন্মভূমিতে ফিরে আসবে।বিজেপি, আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে, আপনাদের পাপের জবাব বাংলার জনগনের কাছে দিতেই হবে।”
