সোনালীদের মামলা দ্রূত শোনার জন্য কলকাতা হাইকোর্টকে নির্দেশ দিল সুপ্রীম কোর্ট

Sonali case

মনিরুল হোসেন

বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি ও তার পরিবারের ৬ জন বর্তমানে বাংলাদেশের জেলে বন্দী রয়েছে। অভিয়োগ বাংলাদেশী বলে তাদের জোর করে দিলেলি থেকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে।এই মামলার দ্রূত শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টকে নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীররা বলেন, ‘‘হাই কোর্টে মামলা শুনতে কোথাও বাধা নেই। আমরা অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব ওই মামলাটি শোনার জন্য।’’

গত ১৮ জুন সোনালীদের আটক করে দিল্লির কে এন কাটজু মার্গ থানার পুলিশ। অভিযোগ, সোনালির গোটা পরিবারকেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সোনালির পরিবারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে বাংলাদেশের পুলিশ গ্রেফতারও করেছে বলে অভিযোগ।

গত জুন মাসে সোনালিরা আটক হওয়ার পর প্রথমে দিল্লি আদালতে মামলা হয়েছিল। পরে সেটি তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তী কালে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের সাহায্যে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন পরিবারের সদস্যেরা। সুপ্রিম কোর্টেও রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকায় হাই কোর্ট ওই মামলা শুনতে চায়নি। এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর মামলা শুনতে আর কোনও বাধা নেই।

সুপ্রীম কোর্টের এই নির্দেশের পর পশ্চিমবঙ্গ পারিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম লিখেছেন

“আমাদের দেশ কি আমেরিকার মতো দেওয়াল তুলছে?” এটাই প্রশ্ন করেছিলেন ভারতের মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট। আজ যখন সুনালি খাতুন এবং অন্যদের মতো অভিবাসী শ্রমিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া /আটক করার মামলাটি শুনছিলেন, সেই সময় এই মন্তব্য করেন মহামান্য বিচারপতিরা।মাননীয় শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির কাছ থেকে সুনালি খাতুন এবং অন্যদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়ে একটি বিস্তারিত হলফনামা জমা দিতে বলেছেন।আমরা জানি, তাদের নির্যাতন করার একমাত্র কারণ তাদের মাতৃভাষা বাংলা এবং তারা আমাদের রাজ্যের মানুষ।সুপ্রিম কোর্ট আজ কলকাতা হাইকোর্টকে সুনালি খাতুন ও অন্যদের মতো মামলাগুলি অবিলম্বে শুনতে এবং তাদের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।এছাড়াও আদালত আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে—গুজরাট রাজ্য সরকারকে এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।সলিসিটর জেনারেলের পরিযায়ী শ্রমিক বোর্ডের এই মামলার আবেদন নিয়ে যে আপত্তি ছিল, আদালত তা উপেক্ষা করেছেন। তবে আমরা সেখানেও নিজেদের বক্তব্য প্রমাণ করতে প্রস্তুত।আদালত পর্যবেক্ষণ করেছে যে, বাংলা এবং পাঞ্জাব সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য রয়েছে, যা মাথায় রাখা জরুরি।

আমাদের আইনগত লড়াই চলবে যতদিন না সুনালি খাতুন এবং সেইসব ভারতীয় নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে আনা হয়। শুধু সুনালি বা এই ধরনের মামলাই নয়, বহু বিজেপি শাসিত রাজ্যে হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারও বিচার আমরা চাই। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী @MamataOfficial-এর নেতৃত্বে আমরা এই বাঙালি-বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা এই দেশে বাঙালি-বিরোধী সংস্কৃতির অবসান ঘটাব।”