‘আই লাভ মহম্মদ ‘পোস্টারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজ্যে উত্তেজনা পুলিশ জনতা খন্ডযুদ্ধ

I love Mohammad

মনিরুল হোসেন

দেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক ঘৃণার পরিবেশ কতটা বিষাক্ত হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে আই লাভ মুহাম্মদ মুখে বলা কিংবা পোষ্টার লেখাকে কেন্দ্র করে হিংসাত্মক ঘটনা লেগেই রয়েছে। যে যার ধর্মগুরু কিংবা প্রিয়জনকে আই লাভ বা আমি ভালবাসি এটা বলতে পারবে না। ভাবুন অবস্থা। আর এর জন্য জনতা পুলিশ খন্ডযুদ্ধ চলবে ভাবা যায় কিন্তু এটা ঘটে চলেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ঘটনার সূত্রপাত

৪ সেপ্টেম্বর কানপুরে ঈদ-মিলাদ-উন-নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রার সময়,  রাস্তার ধারে একটি তাঁবুতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টার লাগানো হয়েছিল। সেই সময় থেকেই এই বিরোধ শুরু হয়। স্থানীয় হিন্দু গোষ্ঠীগুলি এই পোষ্টার লাগানোর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল। তাদের এভিযোগ ইচ্ছাকৃতভাবে একটি হিন্দু মুসলিম পাশাপাশি বসবাসকারী এলাকায় এই পোষ্টার লাগানো হয়েছিল। যেখানে রাম নবমীর মতো হিন্দু উৎসব  পালিত হয়।

এনডি টিভির খবর অনুসার  এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় সম্প্রদায় একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ করায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় – হিন্দুরা অভিযোগ করে যে তাদের পোস্টার তাদের উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে, এবং মুসলমানরা দাবি করে যে কেবল মহা নবীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য অহেতুক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে  সোশ্যাল মিডিয়ায় #ILoveMuhammad হ্যাশট্যাগটি ব্যাপকভাবে ট্রেন্ডিং হওয়ার কারণে চারিদিকে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কানপুর পুলিশ ৯ সেপ্টেম্বর ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

ছবি সৌজন্যে X

উত্তরপ্রদেশের বেরিলিতে উত্তেজনা

এই ঘটনার রেশ এসে পড়ে উত্তর প্রদেশের বেরিলিতে। এখানে শুক্রবারের নামাজের স্থানীয় ধর্মগুরু ও ইত্তেহাদ-ই-মিল্লাত কাউন্সিলের প্রধান মাওলানা তৌকির রাজার ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ প্রচারের সমর্থনে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দেয়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবারের নামাজের পর বেরিলির ইসলামিয়া মাঠে বিশাল জনতা জড়ো হয়।

জুমার নামাজের পরপরই, ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তরা ঘোরাটোপে জনতা জড়ো হয়। সমাবেশ থেকে কেউ কেউ আপত্তিকর স্লোগান দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ। কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগে ওঠার পর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। জনতা পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাগপতের মাউতেও একই রকম বিক্ষোভ

প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে, শুক্রবারের নামাজের পর মাউতে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে স্লোগান দেওয়ার সময় একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। বাড়ি ফিরে যেতে বলা হলে, জনতার কেউ কেউ পাথর ছুঁড়ে মারে বলে অভিযোগ। এরপর পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ করে।বাগপতেও একই রকম একটি মিছিল বের হচ্ছিল। মিছিলের অনুমতি না থাকায় তা বন্ধ করা হলে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ দুজন নামধারী এবং ১৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

হায়দরাবাদের সাংসদ এবং এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিতর্কের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, “যদি কেউ বলে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’, তাহলে সমস্যা কী? ‘ভালোবাসা’ লেখায় সমস্যা কী? এর মাধ্যমে আপনি বিশ্বের মুসলিম দেশগুলিকে কী বার্তা দিতে চান? “আমি মহাদেবকে ভালোবাসি” লেখার সমস্যা কী? এটি করা উচিত, এটি তাদের বিশ্বাস। এটি মুসলিমদের সামাজিকভাবে বয়কট করার একটি উপায়।”