খাসা চালেও পাল্টাবে না অতীত…
যুব কংগ্রেসের এক নেতার সঙ্গে যদি জনৈক এবিভিপি কর্মীর দেখা হয়ে যেত কোনও ভাবে, বেশ হত! কিন্তু তা হওয়ার নয়। সময়ের হিসেব ঘোরতর বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কিনা! যাঁদের কথা বলতে চাইছি, তাঁদের বয়সের ব্যবধান যে অনেকখানি! একজনের যখন এবিভিপি করার বয়স, অন্যজনের ততদিনে কংগ্রেসের যুব নেতা হওয়ার কাল অতিক্রান্ত। তবু কল্পনার খাতিরে সময়কে ধাপ্পা দিয়ে দুজনের অবাস্তব সাক্ষাতের কথা ভাবা যাক একটু।
ভাবা যাক, যুব কংগ্রেস নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrashekar Rao) কথা বলছেন, তর্ক জুড়ছেন, ঝগড়া করছেন এবিভিপি কর্মী রেবন্ত রেড্ডির (Revanth Reddy) সঙ্গে। এমনটা যদি হত, তাহলে আজকের ভাষণের ঠিক উলটো সংলাপ তাঁদের থেকে শুনতে পেতাম আমরা। তখন কেসিআর (KCR) নিশ্চয়ই রেবন্তের দিকে আঙুল তুলে শাসাতেন না, ‘যাও যাও, মেলা বকর বকর কোরো না। দক্ষিণের রাজনীতিতে আধিপত্য কায়েম করতে তোমার গেরুয়া দাদারা তো কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে তলে তলে!’ এসব মোটে বলতেন না কে চন্দ্রশেখর, কারণ তিনি তো নিজেই তখন যুব কংগ্রেসের! বিপরীতে রেবন্তও সেক্ষেত্রে গাঁইগুঁই করতেন না যে, ‘আরে দাদা, এত বাতেল্লা ঝাড়বেন না। খামোখাই ঝুঁকি নিচ্ছেন আপনারা। স্বৈরাচারী বিজেপির ইডি-সিবিআই লাগানো প্রতিহিংসা-পরায়ণ রাজনীতির সঙ্গে এঁটে উঠতে পারবেন তো?’ না, এমন বুলি মুখেই আসত না রেবন্ত রেড্ডির। কেননা, তিনি যে তখন এবিভিপি করেন!
পাঠক, বিরক্ত হবেন না প্লিজ। আপনার ধৈর্যসীমার কথা মাথায় রেখে, এবার কল্পনার পক্ষীরাজকে মাটিতে নামিয়ে আনি, দাঁড়ান। তবে তার আগে একটা কথা বলে নিই, সময়ের সামান্য কারচুপি ছাড়া, এতক্ষণ যা বললাম, তাতে আর একটুও জল মেশানো নেই। বাস্তব হল, তেলঙ্গানার ভোটে কংগ্রেসের কাছে হেরে যাওয়া আজকের বিদায়ী বিআরএস মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেছিলেন যুব কংগ্রেসের নেতা হিসেবে। আর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে পর্যুদস্ত করা কংগ্রেসের সম্ভাব্য ভাবী মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এককালে ছিলেন এবিভিপির একনিষ্ঠ কর্মী!
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/reventh-cong-2-1.jpg)
![](https://amritabazar.in/wp-content/uploads/2023/12/kcr-brs-1.jpeg)
নিন, মাটিতে আছড়ে পক্ষীরাজটাকে মেরে ফেললাম। কিন্তু তাতে চমক কি কিছু কমল? ‘Truth is stranger than fiction.’
এবার বলুন তো, সময়ের চেয়ে আশ্চর্য জুয়াড়ি আর কেউ আছে?