মাদারিহাটে বিজেপির মহাবিপর্যয় অস্তিত্ব সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাম কংগ্রেস

By election result

লেখক- বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য

রাজ্যে ৬টই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ৬টি তেই জিতেছে তৃনমূল কংগ্রেস। তৃনমূলের এই জয়ে সিপিএমের কি কপাল খুলল? বঙ্গের সিপিএম নেতারা তেমন টিই মনে করছেন। কারণ আরও এক দফা উপনির্বাচনে বিজেপির শোচনীয় হল প্রকট হল। ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতে ২০২১ সালে তৃণমূল ই জিতেছিল।

উপনির্বাচনে রাজ্যের শাসক বদলের কোনো সম্ভাবনা থাকে না। ভোটার দের মধ্যেও তেমন উৎসাহ চোখে পড়েনা। তাই উপনির্বাচনের ফল সাধারণ ভাবে শাসক দলের পক্ষেই যায়। কিন্তু এরই মাঝে মাদারিহাট কেন্দ্রে হেরে পদ্ম শিবির জোরালো ধাক্কা খেল।
২০১১ সালে ক্ষমতায় এলেও মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে এর আগে জেতেনি তৃনমূল। বামেদের ক্ষমতা হারানোর পরে প্রতিটি ভোটেই তাদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকে। সেই অঙ্কে বামেদের পরে মাদারিহাট কেন্দ্র যায় বিজেপির দখলে। ২০২১ সালেও এই কেন্দ্রে তারা জেতে। তবে এবার উপনির্বাচনে তারা শুধু হারেনি, তাদের ভোট ও অনেকটাই কমেছে। তাই এই উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট যে ভাবে ক্ষয় হয়েছে বামেদের সে ভাবে হয় নি। লোকসভা নির্বাচনের ফলের বিচারে দেখলে মেদিনীপুরে ও তালড্যাঙরা বিধানসভা কেন্দ্রে বামেদের ভোট কিছুটা বেড়েছে। মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভোটে ধস নামলেও বামেদের ভোট সামান্য ই কমেছে। বামফ্রন্ট শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট কিছুটা বাড়াতে পেরেছে। তবে তেমন আশাপ্রদ কিছু নয়। ওই কেন্দ্রে তারা চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সার্বিকভাবে দেখলে এই দফার উপনির্বাচনে নৈহাটি আসনে লোকসভার তুলনায় ভোট অর্ধেক হলেও সিপিএম এর বা বামেদের রক্তক্ষরণ হয় নি। নৈহাটি আসনে এবার বামেদের নতুন সঙ্গী সিপিআই ( এম এল) প্রার্থী দিয়েছিল।


এবারে বামেদের সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস একা নির্বাচনে লড়েছিল। সিতাই আসনে তৃতীয় হলেও তাদের অন্য আসনগুলোতে বিপর্যয় হয়েছে। মাদারিহাটে তো এক নির্দল প্রার্থীর থেকেও কম ভোট পেয়ে তারা পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি অবশ্য মুখে বিপর্যয় মানতে চায়নি। বঙ্গ বিজেপির নেতারা বলেছেন, উপনির্বাচনে অবাধ ভোট বাংলায় হয় না। ২০২৬ শে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তাঁরা ক্ষমতায় আসবেন। যদিও, এই ফলের পরে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও প্রকট হয়েছে। ‘গেরুয়া দূর্গ ‘ বলে যে আলিপুরদুয়ার কে দাবি করা হয় সেখানে মাদারিহাট আসনে বিজেপি প্রার্থী ২৮,১৬৮ ভোটে হেরেছেন। হারের জন্য আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা জেলা বিজেপি সভাপতি মনোজ টিগ্গাকে নিশানা করেছেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লা। তার মতে, ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ একাই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। সব মিলিয়ে উপনির্বাচনে চতুর্মুখী লড়াইয়ে বিজেপির ভোট কমেছে, কংগ্রেসের হাল শোচনীয়। সেখানে সার্বিক ভাবে বাম ভোটে ক্ষয় হয় নি। তাই সিপিএম এর আশা বিজেপি দূর্বল হলে রাজ্য রাজনীতির দ্বিমেরু ছবি টা বদলাবে। বিরোধী পরিসরের ব্যাটনটা বামেদের হাতে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *